শ্রীদামােদরাষ্টকম্
নমামীশ্বরং সচ্চিদানন্দরূপং
লসৎকুণ্ডলং গােকুলে ভ্ৰাজমানম্।
যশােদাভিয়ােলূখলাব্ধাবমানং
পরামৃষ্টমত্যং ততাে দ্রুত্য গােপ্যা ॥ ১৷৷
অনুবাদ—যিনি সচ্চিদানন্দ-স্বরূপ, যাঁর কর্ণযুগলে কুণ্ডল আন্দোলিত হচ্ছে, যিনি গােকুলে পরম শােভা বিকাশ করছেন এবং যিনি শিক্য অর্থাৎ শিকায় রাখা নবনীত (মাখন) অপহরণ করায় মা যশােদার ভয়ে উদূখলের উপর থেকে লম্ফ প্রদান করে অতিশয় বেগে ধাবমান হয়েছিলেন ও মা যশােদাও যাঁর পশ্চাতে ধাবিত হয়ে পৃষ্ঠদেশ ধরে ফেলেছিলেন, সেই পরমেশ্বররূপী শ্রীদামােদরকে প্রণাম করি।
রুদন্তং মুহুর্নেত্রযুগ্মং মৃজন্তং
করাম্ভোজযুগ্মেন সাতঙ্কনেত্রম্ ।
মুহুঃশ্বাসকষ্প-ত্রিরেখাঙ্ককণ্ঠ
স্থিত-গ্রৈব-দামােদরং ভক্তিবদ্ধম্ ॥ ২ ৷৷
অনুবাদ—যিনি জননীর হস্তে যষ্টি দেখে রােদন করতে করতে দু’খানি পদ্মহস্ত দ্বারা বারবার নেত্রদ্বয় মার্জন করছেন, যিনি ভীতনয়ন হয়েছেন ও সেইজন্য মুহুর্মুহু শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত কম্প-নিবন্ধন যাঁর কণ্ঠস্ত মুক্তাহার দোদুল্যমান হচ্ছে এবং যাঁর উদরে রজ্জুর বন্ধন রয়েছে, সেই ভক্তিবদ্ধ শ্রীদামােদরকে বন্দনা করি।
ইতীদৃক্ স্বলীলাভিরানন্দকুণ্ডে
স্বঘােষং নিমজ্জন্তমাখ্যাপয়ন্তম্ ।
তদীয়েশিতজ্ঞেযু ভক্তৈর্জিতত্বং
পুনঃ প্রেমতস্তং শতাবৃত্তি বন্দে ৷৷ ৩৷৷
অনুবাদ—যিনি এইরকম বাল্যলীলা দ্বারা সমস্ত গােকুলবাসীকে আনন্দ সরােবরে নিমজ্জিত করেন এবং যিনি ভগবদৈশ্বর্য-জ্ঞান-পরায়ণ ভক্তসমূহে আমি ভক্ত কর্তৃক পরাজিত অর্থাৎ ভক্তের বশীভূত’-এই তত্ত্ব প্রকাশ করেন, সেই ঈশ্বররূপী দামােদরকে আমি প্রেম-সহকারে শত শতবার বন্দনা করি।
বরং দেব! মােক্ষং ন মোক্ষাবধিং বা
ন চান্যং বৃণেহহং বরেশাদপীহ।
ইদন্তে বপু র্নাথ! গােপালবালং
সদা মে মনস্যাবিরাস্তাং কিমন্যৈঃ ॥ ৪৷৷
অনুবাদ— হে দেব! তুমি সবরকম বরদানে সমর্থ হলেও আমি তােমার কাছে, মােক্ষ বা মােক্ষের পরাকাষ্ঠাস্বরূপ শ্রীবৈকুণ্ঠলােক বা অন্য কোন বরণীয় বস্তু প্রার্থনা করি না, তবে আমি কেবল এই প্রার্থনা করি যে, এই বৃন্দাবনস্থ তােমার ঐ পূর্ববর্ণিত বালগােপালরূপী শ্রীবিগ্রহ আমার মানসপটে সর্বদা আবির্ভূত হােক। হে প্রভাে! যদিও তুমি অন্তর্যামীরূপে সর্বদা হৃদয়ে অবস্থান করছ, তবুও তােমার ঐ শৈশব লীলাময় বালগােপাল মূর্তি সর্বদা সুন্দররূপে আমার হৃদয়ে প্রকটিত হােক।
ইদন্তে মুখাম্ভোজমব্যক্তনীলৈ
র্বৃতং কুন্তলৈঃ স্নিগ্ধ-রক্তৈশ্চ গােপ্যা।
মুহুশ্চুম্বিতং বিম্ব-রক্তাধরং মে
মনস্যাবিরাস্তামলং লক্ষলাভৈঃ ॥৫॥
অনুবাদ— হে দেব! তােমার যে বদন-কমল অতীব শ্যামল, স্নিগ্ধ ও রক্তবর্ণ কেশসমূহে সমাবৃত এবং তােমার যে বদনকমলস্থ বিম্বফলসদৃশ রক্তবর্ণ অধর মা যশােদা বারবার চুম্বন করছেন, সেই বদনকমলের মধুরিমা আমি আর কি বর্ণন করব? আমার মনােমধ্যে সেই বদন-কমল আবির্ভূত হােক। ঐশ্বর্যাদি অন্যবিধ লক্ষ লক্ষ লাভেও আমার কোন প্রয়ােজন নেই—আমি অন্য আর কিছুই চাই না।
নমাে দেব! দামােদরনন্ত!বিষ্ণো!
প্রসীদ প্রভাে দুঃখজালাব্ধিমগ্নম্ ।
কৃপাদৃষ্টি-বৃষ্ট্যাতিদীনং বতানু-
গৃহাণেশ! মামজ্ঞমেধ্যক্ষি দৃশ্যঃ ॥৬॥
অনুবাদ— হে দেব! হে দামােদর! হে অনন্ত! হে বিষ্ণু! আমার প্রতি প্রসন্ন হও। হে প্রভাে! হে ঈশ্বর ! আমি দুঃখপরম্পরারূপ সমুদ্রে নিমগ্ন হয়ে একেবারে মরণাপন্ন হয়েছি, তুমি কৃপাদৃষ্টিরূপ অমৃত দ্বারা আমার প্রাণ রক্ষা কর।
কুবেরাত্মজৌ বদ্ধমূৰ্ত্যৈব যদ্বৎ
ত্বয়া মােচিতৌ ভক্তিভাজৌ কৃতৌ চ।
তথা প্রেমভক্তিং স্বকাং মে প্রযচ্ছ
ন মােক্ষে গ্রহােমেহস্তি দামােদরেহ ॥ ৭ ৷৷
অনুবাদ— হে দামােদর! তুমি যেরকম গো অর্থাৎ গাভী-বন্ধন রঞ্জু দ্বারা উদূখলে বদ্ধ হয়ে শাপগ্রস্ত নলকুবের ও মণিগ্রীব নামক কুবেরপুত্রদ্বয়কে মুক্ত করত তাদের ভক্তিমান্ করেছ, আমাকেও সেইরকম প্রেমভক্তি প্রদান কর। এই প্রেমভক্তিতেই আমার আগ্রহ। মােক্ষের প্রতি আমার আগ্রহ নেই।
নমস্তেহস্তু দায়ে স্ফুরদ্দীপ্তি-ধান্নে
ত্বদীয়ােদরায়াথ বিশ্বস্য ধাম্নে ।
নমাে রাধিকায়ৈ ত্বদীয় প্রিয়ায়ৈ
নমােনন্ত-লীলায় দেবায় তুভ্যম্ ৷৷ ৮ ৷৷
অনুবাদ— হে দেব! তােমার তেজোময় উদরবন্ধন-রজ্জুতে এবং বিশ্বের আধারস্বরূপ তােমার উদরে আমার প্রণাম থাকুক। তােমার প্রিয়তমা শ্রীরাধিকাকে আমি প্রণাম করি এবং অনন্তলীলাময় দেব তােমাকে নমস্কার করি।
গােস্বামী গণের বিগ্রহদের নামস্মরণ
(১)
জয় রাধা-মাধব রাধা-মাধব রাধে
জয়দেবের প্রাণধন হে
(২)
জয় রাধা-দামােদর রাধা-দামােদর রাধে
জীব গােস্বামীর প্রাণধন হে
(৩)
জয় রাধা-মদনমােহন রাধা-মদনমােহন রাধে
সনাতনের প্রাণধন হে
( ৪ )
জয় রাধা-গােবিন্দ রাধা গােবিন্দ রাধে
রূপ গােস্বামীর প্রাণধন হে
(৫)
জয় রাধা-গােপীনাথ রাধা-গােপীনাথ রাধে
মধু পণ্ডিতের প্রাণধন হে
(৬)
জয় রাধা-মদনগােপাল রাধা মদনগােপল রাধে
সীতানাথের প্রাণধন হে
(৭)
জয় রাধা-রমণ রাধা-রমণ রাধে
গােপাল ভট্টের প্রাণধন হে
( ৮ )
জয় রাধা-বিনােদ রাধা-বিনােদ রাধে
লােকনাথের প্রাণধন হে
(৯)
জয় রাধা-গােকুলানন্দ রাধা-গােকুলান্দ রাধে
বিশ্বনাথের প্রাণধন হে।
(১০)
জয় রাধা-গিরিধারী রাধা-গিরিধারী রাধে
দাস গােস্বামীর প্রাণধন হে
(১১)
জয় রাধা-শ্যামসুন্দর রাধা-শ্যামসুন্দর রাধে
শ্যামানন্দের প্রাণধন হে
(১২)
জয় রাধা-বন্কুবিহারী রাধা-বন্কুবিহারী রাধে
হরিদাসের প্রাণধন হে
(১৩)
জয় রাধা-কান্ত রাধা-কান্ত রাধে
বক্রেশ্বরের প্রাণধন হে
(১৪)
জয় গান্ধার্বিকা-গিরিধারী গান্ধার্বিকা-গিরিধারী রাধে
সরস্বতীর প্রাণধন হে
(১৫)
জয় রাধা-মাধব রাধা-মাধব রাধে
শ্রীল প্রভুপাদের প্রাণধন হে
কোন মন্তব্য নেই