বিগ্রহ অৰ্চনের অনুষ্ঠান করি কেন?
ভগবানের সেবায় কোনও ভক্ত বৈধী-সাধন-ভক্তি অনুশীলনের প্রারম্ভিক পর্যায়ে যাতে তার সমগ্র ইন্দ্রিয়াদি নিয়ােগ করতে পারে, তার জন্য শ্রীল রূপ গােস্বামী চৌষট্টি ধরনের ভক্ত্যঙ্গ তথা ভক্তিমূলক ক্রিয়াকলাপের বিধি রচনা করে গিয়েছেন। সেইগুলির মধ্যে তিনি পাঁচটিকে প্রধান ভক্ত্যঙ্গ রূপে মনােনীত করেছেন
১) শ্রীমদ্ভাগবত শ্রবণ
২) প্রবীণ ভক্তসঙ্গ
৩) মথুরাদি পুণ্যভূমিতে বাস।
৪) ভগবানের পবিত্র নাম জপ।
৫) গভীর বিশ্বাস সহকারে ভগবানের বিগ্রহরূপের সেবা
এই শ্রেষ্ঠ সাধনাঙ্গগুলি অনুশীলন করলে ভগবদ্ভক্তিমূলক সেবাকার্যে দ্রুত উন্নতি সুনিশ্চিত হয় এবং তার মাধ্যমে শুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেম লাভের লক্ষ্যে উপনীত হওয়া যায়।
এই পাঁচটি সাধনাঙ্গ তথা ক্রিয়াকলাপের নীতিসূত্র অতীব অদ্ভুত এবং দুরূহ। এইগুলির প্রতি শ্রদ্ধার কথা দুরে থাকুক, কেউ যদি নিরপরাধে তাতে কেবলমাত্র স্বল সম্বন্ধও রক্ষা করতে পারে, তা হলে তার সুপ্ত কৃষ্ণপ্রেম জাগরিত হয়। (ভক্তিরসামৃতসিন্ধু ১/২/২৩৮ থেকে শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, মধ্যলীলা ২২/১৩৩ গ্রন্থে উদ্ধৃত)।
বাকি উনষাটটি সাধনাঙ্গের মধ্যে অন্তত পঁয়ত্রিশটি ভগবানের অর্চা-বিগ্রহের অর্চনায় প্রত্যক্ষভাবে প্রযােজ্য। সুতরাং বিগ্রহ অৰ্চনের শেষােক্ত পাঁচটি সাধনাঙ্গ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ভক্তগণ প্রত্যহ যে সকল বিভিন্ন ধরনের সাধনাঙ্গ চর্চা করে থাকেন, এইগুলির মধ্যে সেই সমস্তই রয়েছে। বস্তুত, এই একটি মাত্র বিষয়, অর্চন, তাকেই চৌষট্টি রকমের ভক্ত্যঙ্গ তথা সাধনাঙ্গে বিস্তারিত করা রয়েছে, সেইগুলির মধ্যে আবার অনেকগুলি ভগবদ্ভক্তিমূলক সেবা অনুশীলনের চৌষট্টি অঙ্গের মধ্যেও সহযােগী ক্রিয়াকলাপ রূপে। অভ্যাস করতে হয়।
পঞ্চরাত্র প্রদীপ থেকে সংগ্রহীতর্
কোন মন্তব্য নেই