অনর্থের ফলে সৃষ্ট উৎপাত
অনর্থের ফলে অসৎসঙ্গ কুটীনাটী, বহির্মুখাপেক্ষা প্রভৃতি বহু উৎপাতের সৃষ্টি হয়; তাতে ভজন বিশুদ্ধ হতে দেয় না। অসৎসঙ্গে নানারূপ অসদালোচনা হয়; তাতে অসদ্বিষয়ে আসক্তি প্রবল হয়ে বিশুদ্ধ ভজনে অত্যন্ত বিঘ্ন জন্মায়।
অনর্থের শ্রেনীবিভাগঃ
শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর তাঁর ভজনরহস্য গ্রন্থে বলেছেন - অনর্থ, যা মায়া নিগড়ে জীবকে আবদ্ধ করে রাখে সেই অনর্থ চার প্রকার এবং সেই চার প্রকার অনর্থের প্রত্যেকটিকে আবার চার শ্রেনীতে বিভক্ত করেছেন।
মায়ামুগ্ধস্য জীবস্য জ্ঞেয়োহনর্থশ্চতুর্বিধঃ।
হৃদ্দৌর্বলস্যঞ্চাপরাধোহসতৃষ্ণা তত্ত্ববিভ্রমঃ॥
মায়ামুগ্ধ জীবের জ্ঞাত অনর্থ চতুর্বিধ -
১। হৃদয় দৌর্বল্য- - ক) তুচ্ছাসক্তি,
খ) কুটীনাটী
গ) মাৎসর্য
ঘ) প্রতিষ্ঠাশা
২। অপরাধ ক) নামাপরাধ,
খ) সেবাপরাধ
গ) বৈষ্ণব অপরাধ,
ঘ) জীব অপরাধ।
৩। অসত্তৃষ্ণা ঃ - ক) ঐহিক বিষয়ে এষণা,
খ) পারত্রিক বিষয়ে অশুভ এষণা,
গ) যোগ বিভূতি বাঞ্ছা,
ঘ) মোক্ষ কামনা।
৪। তত্ত্ববিভ্রম ঃ- ক) স্ব-তত্ত্ব ভ্রম,
খ) পরতত্ত্ব ভ্রম,
গ) সাধ্য-সাধন তত্ত্বে ভ্রম,
ঘ) বিরোধী বিষয়ে ভ্রম(ভজনের)।
শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর তাঁর মাধূর্য্য কাদম্বিনী গ্রন্থে যে চার রকমের অনর্থের উল্লেখ করেছেন তা হল -(১) দু®কৃতোত্থ, (২) সুকৃতোত্থ, (৩) অপরাধোত্থ এবং (৪) ভক্তুত্থ ।
সম্পদের লোভে মানুষের যে আরও পনেরটি অনর্থের উদ্ভব হয় সেগুলি হল-
(১) চৌর্য্য, (২) হিংস্রতা, (৩) মিথ্যা ভাষণ, (৪) কপটতা, (৫) ক্রোধ, (৬) কাম বাসনা, (৭) বিভ্রান্তি, (৮) গর্ব, (৯) কলহ, (১০) শত্রুতা, (১১)হিংসা, (১২) অবিশ্বাস, (১৩) অবৈধ স্ত্রী সঙ্গ,(১৪) জুয়া, (১৫) নেশা।
এই অনর্থগুরি ষড়রিপুর জন্ম দেয় - (১) কাম, (২) ক্রোধ, (৩),লোভ, (৪) মোহ, (৫) মদ ও (৬) মাৎসর্য্য ।
তাছাড়া অনর্থ সমূহ ছয়টি তরঙ্গ উৎপন্ন করে - (১) শোক, (২) মোহ, (৩) ক্ষুধা, (৪) পিপাসা, (৫) জরা ও (৬) মৃত্যু।
কোন মন্তব্য নেই