একাদশীতে অন্নমাত্রেই বর্জ্জনীয়
কোন কোন বৈষ্ণবাভিমানী ব্যক্তি একাদশীতে আটা, শ্যামাচাউল, সূজি, ছোলা, মুগ, প্রভৃতিকে ‘অন্ন’ নহে মনে করিয়া ভোজনরূপে গ্রহণ করিয়া থাকেন। কিন্তু ‘অন্নম্’ বলিতে ‘অত্তুং যোগ্যং অন্নম্’ অর্থাৎ ভোজ্য-সামগ্রী মাত্রকেই বুঝায়। হরিবাসরে বস্তুতঃ কোনও প্রকার ভোজ্য-সমিগ্রীই গ্রহণীয় নহে। নিতান্ত অসমর্থ পক্ষেই ফল, মূল, দুগ্ধাদি ব্রতনাশক বলিয়া গ্রহণের ব্যবস্থা হইয়াছে। এতদ্ প্রসঙ্গে পদ্ম পুরাণে শিব-পার্ব্বতী সংবাদে দেখা যায়,-
অন্নন্তু ধান্যসম্ভূতং গিরিজে যদি জায়তে।
ধান্যানি বিবিধানীহ জগত্যাং শৃণু যত্নতঃ ॥
শ্যাম-মাস-মসূরাশ্চ ধান্য-কোদ্রব-সর্ষপাঃ।
যব-গোধূম-মুদ্গাশ্চ তিল-কঙ্গু-কোলথকাঃ ॥
গবেধুকাশ্চ নিবারা আতকশ্চ কলায়কাঃ।
মা-ুকো বজ্রকো রঙ্কঃ কীচকো বড়কস্তথা।
তিলকশ্চণকাদ্যশ্চ ধান্যানি কথিতানীহ ॥
হে গিরিজে ! ধান্যসম্ভূত বস্তুই ‘অন্ন’ নামে কথিত হইয়া থাকে। এ জগতে বিবিধ প্রকার ধান্য আছে, যত্নপূর্ব্বক তাহা শ্রবণ কর-শ্যাম(শামা ধান), মাস, মসুর, ধান্য, কোদ্রব(কোদধান), সর্ষপ, যব, গোধূম (গম), মুদ্গ (মুগ), তিল, কঙ্গু (কাউন), কুলথ, গবেধুক (তৃণধান্য), আতক, কলায়ক (মটর), মা-ক, বজ্রক (বাজরা), রল্ক, কীচক (বাংশধান), বড়ক (বরবটী), তিলক হোমধান), চণক ছোলা এবং আদি শব্দে জুয়ার, ভুট্টা প্রভৃতি বুঝিতে হইবে।
অতএব শ্যামাচাউল, আটা, ছোলা প্রভৃতি ‘অন্ন’ বলিয়া পরিগণিত হওয়ায় তাহা একাদশীতে পরিত্যজ্যই জানিতে হইবে।
কোন মন্তব্য নেই