একাদশীতে মহাপ্রসাদ সেবনীয় নহে
মহাপ্রসাদ সম্বন্ধে অশেষ মহিমা সকল শাস্ত্রই কীর্ত্তন করিয়া থাকেন। কিন্তু হরিবাসর-ব্রতে মহাপ্রসাদ কেবন করিলে উভয়কেই অবজ্ঞা করা হয়। কেহ কেহ ‘রাগমার্গীয় বৈষ্ণব’-অভিমান-বশে একাদশী প্রভৃতি হরিতিথিতেও মহাপ্রসাদ ভোজন করেন।তাঁহাদের উদ্দেশ্যে গৌতমীয় তন্ত্রে বলা হইয়াছে,-
বৈষ্ণবো যদি ভুঞ্জীত একাদশ্যাং প্রমাদতঃ।
বিষ্ণুর্চ্চনং বৃথা তস্য নরকং ঘোরমাপ্নুয়াৎ ॥
“প্রমাদবশতঃও কোন বৈষ্ণব যদি একাদশীতে ভোজন করেন, তবে তাহার সকল বিষ্ণুপূজা কেবল ব্যর্থই নহে, তাহাকে নরক গমনও করিতে হয়।”
শ্রীপুরুষোত্তম ধামে ‘হরিবাসর-ব্রতসকল বাঁধা আছে’ মনে করিয়া সে-স্থানে কিছু তত্ত্ব-জ্ঞানহীন লোকের মধ্যে একাদশীতে মহাপ্রসাদ সেবনের যে রীতি দেখা যায়, তাহা নিতান্তই শাস্ত্র বিরুদ্ধ। স্বয়ং শ্রীগৌরহরি শ্রীপুরুষোত্তম ধামে হরিবাসরে ব্রতোপবাস করিয়া সেই রীতির শাস্ত্রীয়-অবৈধতা প্রমাণ করিয়াছেন। একসময় একাদশী-ব্রতোপবাসকালে শ্রীমন্ মহাপ্রভুর অগ্রে কেহ শ্রীজগন্নাথদেবের বিচিত্র মহাপ্রসাদ ধরিলে তিনি উপস্থিত সকলকে বলিলেন,-
“প্রসাদসেবন আর শ্রীহরিবাসরে।
বিরোধ না কর কভু বুঝহ অন্তরে ॥
এক অঙ্গ মানে, আর অন্য অঙ্গে দ্বেষ।
যে করে, নির্ব্বোধ সেই জানহ বিশেস ॥
একাদশী দিনে নিদ্রাহার-বিসর্জ্জন।
অন্য দিনে প্রসাদ-নির্মাল্য সেবন ॥” (প্রেমবিবর্ত্ত)
বস্তুতঃ ভগবানের সন্তোষ-বিধানের জন্যই ভক্তগণের মহাপ্রসাদ-সেবন ও একাদশী-ব্রতপালন-তাঁহারা তজ্জন্য পরস্পরের মধ্যে কোন বিরোধ করেন না।
কোন মন্তব্য নেই