আগুন আর মাখন।

 


বৈদিক শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, নারী হল আগুনের মতাে, আর পুরুষ হল মাখনের মতাে। যখন আগুন এবং মাখনকে যথেষ্ট ব্যবধানে রাখা হয়, তখন মাখন গলতে পারে না। কিন্তু যখন আগুন ও মাখনকে পাশাপাশি রাখা হয়, তখন মাখন তাে গলবেই, উপরন্তু, আগুন আরও প্রবলভাবে জ্বলে উঠবে। অবশেষে মাখনও নিঃশেষিত হবে, আগুনও স্তিমিত হবে।


এইজন্য বৈদিক শাস্ত্রে নারী এবং পুরুষকে কঠোরভাবে বিচ্ছিন্ন করে | রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আধুনিক যুগের মানুষ উদারতার নাম করে নারী-পুরুষের এই দূরত্বকে আর বজায় রাখতে চাইছে না। বিশেষ করে পাশ্চাত্য দেশগুলি এ ব্যাপারে একেবারে মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।


কিন্তু 'ফলেন পরিচীয়তে'। ফল দেখেই বােঝা যাচ্ছে, এই অবাধ সংমিশ্রণ কত ভয়াবহ। নারী-পুরুষের এই অবাধ মিলনেরই ফলশ্রুতি স্বরূপ বহু গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে। ক্ষণিকের উত্তেনায় তারা তথাকথিত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে। কিছু দিন যেতে না-যেতেই ঘটছে। বিবাহবিচ্ছেদ।


পাশ্চাত্য দেশের অধিকাংশ নারী-পুরুষই জীবনে কম করেও নয়, দশ বার বিয়ে করে। কাতারে-কাতারে অবাঞ্ছিত সন্তানের জন্ম হচ্ছে। তারা উপযুক্ত স্নেহ-ভালবাসা পাচ্ছে না। অসংখ্য গর্ভপাত, আত্মহত্যা, খুন,—এই সমস্ত সামাজিক সমস্যার মূল কারণ হল নারী-পুরুষের এই অবাধ মিলন।।


তাই, আধুনিকতা এবং নারী স্বাধীনতার নাম দিয়ে বােকা লােকেরা যাই করুক না কেন, বুদ্ধিমানদের সতর্ক হতে হবে। বৈদিক মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনাে অবিবাহিত নারী এক রাতের জন্যও যদি ঘরের বাইরে গিয়ে থাকে তবে কেউ তাকে বিবাহ করবে না। এমনকি বিবাহিতা নারীও এক রাতের জন্যও যথেচ্ছ বিচরণ করতে পারবে না। শ্রীমদ্ভাগবতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে :


মাত্রা স্বস্ত্রা দুহিত্ৰা বা

নাবিবিক্তাসনাে ভবেৎ।

বলবান্ ইন্দ্রিয়-গ্রামাে

বিদ্বাংসমপি কৰ্ষতি।

(ভাঃ ৯/১৯/১৭) 


আধুনিকতার নাম করে এমনকি নিজের মেয়ে, বােন, কিংবা মায়ের সঙ্গেও নির্জনে কাছাকাছি অবস্থান করবে না। 


সচ্চিদানন্দ শ্রীল ভক্তিবিনােদ ঠাকুর এমনকি তার স্ত্রীর কাছ থেকেও দূরে অবস্থান করতেন। সচরাচর স্ত্রীর মুখ দর্শন করতেন না। স্বয়ং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুও তার গৃহস্থ লীলায় এই শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। বৈদিক যুগে, কি বিবাহিত, কি অবিবাহিত—সমস্ত নারীরাই থাকতেন অন্তঃপুরে। তারা সুর্যদেবকেও সচরাচর দেখতে পেতেন না। মুল্যবান মণিমুক্তার মতাে পুরুষ অভিভাবকরা তাদের রক্ষা করতেন। সম্রান্ত বংশের মহিলারা আচ্ছাদিত পালকিতে করে সসম্মানে বাইরে যেতেন। আর পুরুষের বিশেষ প্রয়ােজন ছাড়া অন্তঃপুরে যেতেন না।


বিবাহিত নারী-পুরুষের কর্তব্য—

পৃথক পৃথক ঘরে বসবাস করা।

(ভাঃ ৩/৩১/৪০ তাৎপর্য)


একমাত্র গর্ভাধান সংস্কার অনুষ্ঠানকালেই তারা একত্রে বাস করতে পারেন। আর অবিবাহিত নারী-পুরুষ অত্যন্ত কঠোরতার সঙ্গে এই দূরত্ব বজায় রাখবেন। এতে সমাজের শ্রীবৃদ্ধি এবং পারমার্থিক প্রগতি অনিবার্য।


আদর্শ গৃহস্থ জীবন থেকে সংগ্রহীতর্

: APP Link Downloads :

কোন মন্তব্য নেই

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.