অথ গর্ভাধানম্‌

 


প্রয়োজনীয় উপকরণঃ-

১) ষোড়শ উপাচারে পূজার উপকরন।

২) অক্ষত ( আতপ চাল, গুড়ো হলুদ মিশ্রন)

৩) গোময়, গোমুত্র, মাটি, জল

৪) অর্ঘ্য (ফুল, সাদা চাল, বার্লি, তিল, দূর্বাঘাস, কুশাগ্র, সাদা সরিষা এবং গন্ধ)।

৫) জল শঙ্খ

 

গর্ভাধানঃ-

·পত্নীর ঋতুস্নানের পরে নিষেক (বীর্য্যাধান) দিবসে পতি প্রাতঃকৃত্য সমাপন পূর্বক স্নান করে শুচি হয়ে আচমন করে নিত্য সন্ধ্যা সম্পাদন করতে হবে।

·পুরুষসূক্ত মন্ত্র দ্বারা ষোড়শ উপাচারে শ্রীশ্রী রাধা-কৃষ্ণের এবং তার পার্ষদদের (বৈষ্ণব দের) অর্চন করতে হবে।

·পতি পত্নী সারাদিন সম্পূর্ণ কৃষ্ণভাবনায় থাকিবেন। (পতি-পত্নীর মধ্যে যেন কোনো প্রকার  দ্বন্দ্ব বা কলহ না হয়।) পতি-পত্নী ৫০ মালা করে মহামন্ত্র জপ।

·সায়ংকালে সন্ধ্যাকৃত্য আদি সমাপনান্তে শ্রীভগবানের সন্মুখে গোময়, গোমুত্র, মাটি ও জলের মিশ্রন দ্বারা লেপন করতে হবে।

·পতি-পত্নী ভগবানের শ্রীবিগ্রহের সন্মুখস্থ হয়ে মঙ্গলাচরন এবং স্বস্তিবাচন পাঠ করবেন।

·ভগবানের শ্রীবিগ্রহকে নিম্নলিখিত মন্ত্র দ্বারা পাঁচ বার জলশঙ্খ দ্বারা অর্ঘ্য প্রদান করতে হবে।

ওঁ জগন্নাথ মহাবাহো সর্ব্বোপদ্রবনাশন।

নবপুষ্পোৎসবে মেহর্ঘং গৃহাণ জগদীশ্বর।।১।।

এতদ অর্ঘ্যম্‌ ওঁ শ্রীবিষ্ণবে নমঃ

 

ওঁ নারায়ণ হরে রাম গোবিন্দ গরুড়ধ্বজ।

নবপুষ্পোৎসবে মেহর্ঘং গৃহাণ পরমেশ্বর।।২।।

এতদ অর্ঘ্যম্‌ ওঁ শ্রীবিষ্ণবে নমঃ

 

ওঁ দীনবন্ধো কৃপাসিন্ধো পরমানন্দ মাধব।

নবপুষ্পোৎসবে মেহর্ঘং গৃহাণ মধুসূদন।।৩।।

এতদ অর্ঘ্যম্‌ ওঁ শ্রীবিষ্ণবে নমঃ

 

ওঁ বিশ্বাত্মন্‌ বিশ্বোবন্ধো হি বিশ্বেশ বিশ্বলোচন।

নবপুষ্পোৎসবে মেহর্ঘং গৃহাণ শ্যামসুন্দর।।৪।।

এতদ অর্ঘ্যম্‌ ওঁ শ্রীবিষ্ণবে নমঃ

 

ওঁ চিদানন্দ হৃষীকেশ ভক্তবশ্য জনার্দন।

নবপুষ্পোৎসবে মেহর্ঘং গৃহাণ কমলাপতে।।৫।।

এতদ অর্ঘ্যম্‌ ওঁ শ্রীবিষ্ণবে নমঃ

 

·পতি-পত্নী যে স্থানে মিলিত হবেন সেই স্থানে উভয়ে উপস্থিত হবেন। পতি-পত্নী মিলিত হবার পূর্বে পতি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে, সুবেশ পরিহিত হয়ে এবং চন্দন দ্বারা সুসজ্জিত হবেন। পত্নী পূর্বমুখী হয়ে বসবেন এবং পতি পত্নীর পিছনে পুর্বমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে পত্নীর ডান স্কন্ধের উপর দিয়ে হাত নামিয়ে নিজ ডান হাত দিয়ে পত্নীর যোনীদেশ স্পর্শ করে নিম্নলিখিত মন্ত্র উচ্চারণ করবেন।

ওঁ বিষ্ণু যোনিং কল্পয়তু, অচ্যুতো রূপাণি পিংশতু।

আসিঞ্চতু হরিঃ গর্ভং জগদীশো দধাতু তে।। ১।।

 

ওঁ গর্ভং ধেহি গর্ভোদশায়িন, গর্ভং তে নরনারায়ণৌ।

আধত্তাং পুষ্করস্রজৌ।।।

 

·এরপর পত্নীর নাভিদেশ স্পর্শ করে নিম্নলিখিত মন্ত্রটি উচ্চারন করতে হবে।

              ওঁ দীর্ঘায়ূষং কৃষ্ণভক্তং পুত্রং জনয় সুব্রতে।

 

·এরপর পতি-পত্নী নিষেক কার্য্য সম্পন্ন করবেন।

 

গর্ভাধানের শুভ সময়

নক্ষত্রঃ- রোহিনী, উত্তরা ফাল্গুনী, উত্তরাষাঢ়া, উত্তরা ভাদ্রপাদ, হস্তা, মৃগশিরা, অনুরাধা, পূর্নবসু, স্বাতি, শ্রবিষ্ঠা, ধনিষ্ঠা এবং শতভিষক।

 

পুত্র সন্তান জন্মের জন্যঃ-

ঋতুস্রাব শুরু থেকে ৬ষ্ঠ, ৮ম, ১০ম, ১২শ, ১৪শ এবং ১৬শ দিন, সবচেয়ে ভালো ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার ৭ম দিন অথবা অন্যান্য দিন।

বারঃ-  মঙ্গলবার এবং রবিবার।

 

কন্যা সন্তান জন্মের জন্যঃ-

ঋতুস্রাব শুরু থেকে ৫ম, ৭ম, ৯ম, ১১শ, ১৩শ এবং ১৫শ দিন, সবচেয়ে ভালো ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার ৭ম দিন অথবা অন্যান্য দিন।

বারঃ-  সোমবার, বৃহষ্পতিবার এবং শুক্রবার

 

গর্ভাধানের অশুভ সময়ঃ-

নক্ষত্রঃ-  ভরনী, কৃত্তিকা, আর্দ্রা, অশ্লেষা, মঘা, পূর্ব ফাল্গুনী, বিশাখা, জ্যেষ্ঠা, মূলা, পূর্বাষাঢ়া এবং ভাদ্রপাদ।

তিথিঃ- চতুর্থী, ষষ্ঠী, নবমী, চতুর্দশী, পূর্ণিমা ও অমাবস্যা।

বারঃ- শনিবার।

অন্যান্য সময়ঃ-  দিনের বেলা, সূর্যাস্ত, সূর্য অথবা চন্দ্র গ্রহণের সময়, পিতা অথবা মাতার মৃত্যুবার্ষিকীর দিন, এবং উৎসবের দিন।

 

 

ইতি সামবেদীয় গর্ভাধান

কোন মন্তব্য নেই

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.