একাদশী ব্রতোপবাসের পারণ বিধি
ব্রতোপবাসের পরদিবস প্রাতঃকালে শ্রীহরির মঙ্গলারাত্রিক সম্পাদন পূর্ব্বক মহাপ্রসাদাদি-অর্পণ দ্বারা বৈষ্ণববৃন্দকে সম্মান করিতে হইবে। পরে প্রাতঃকালে পূজা সমাধা করিয়া শ্রীকৃষ।নকে উপবাসাদি অর্পণ করিতে হইবে (হঃ ভঃ বিঃ ১৩/২২৯)। পারণকাল অল্প থাকিলে অরুণোদয়-কাল মদ্যেই ¯œান-অর্চ্চনাদি কর্ত্তব্য।
তন্মধ্যে উপবাস-সমর্পণ মন্ত্র-
“অজ্ঞানতিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব।
প্রসীদ সুমুখো নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব ॥”
‘হে কেশব ! আপনি সুমুখ হইয়া এই ব্রত দ্বারা অজ্ঞানান্ধকারে অন্ধ এই আমার প্রতি প্রীত হউন এবং আমাকে জ্ঞানদৃষ্টি প্রদান করুন।’
এবং পারণ মন্ত্র-
“তব প্রসাদ স্বীকারাৎ কৃতং যৎ পারণং ময়া।
ব্রতনানেন সন্তুষ্টঃ স্বস্তিং ভক্তিং প্রযচ্ছে ম ॥”
অর্থাৎ ‘হে নাথ, আপনার প্রসাদ গ্রহণ দ্বারা আমি ব্রতের পারণ করিতেছি। এই ব্রতদ্বারা আপনি প্রসন্ন হইয়া স্বস্তি ও ভক্তি আমাকে প্রদান করুন।’
এইরূপে শ্রীহরিকে স্মরণ করিতে করিতে নির্দিষ্ট পারণ-সময়ে পারণ করিতে হইবে। এতৎপ্রসঙ্গে স্কন্দপুরাণে উক্ত আছে যে, -“উপবাস করিয়া দ্বাদশীতে তুলসী সমন্বিত নৈবেদ্য ভক্ষণ করিলে কোটিপাপ বিনষ্ট হয়” (হঃ ভঃ বিঃ ১৩/২৩৭)। কিন্তু কোন ঘোর সঙ্কট উপস্থিত হইলে মন্ত্র জপ করিয়া হরির উদ্দেশ্যে উপবাস নিবেদন করিয়া জলদ্বারা পারণ করাই কর্ত্তব্য (হঃ ভঃ বিঃ ১৩/২৫৫)।
একাদশী ব্রতের তালিকা
মহর্ষি সূত গোস্বামী ১২ মাসের ২৪ টি এবং অধিমাস বা পুরুষোত্তম মাসে আরও ২ টি এই মোট ২৬ টি একাদশীর মাহাত্ম্য কীর্ত্তন করেন। নিম্নো তাহার তালিকা বিবৃত হইতেছে-
মাসের নাম পক্ষের নাম একাদশীর নাম
বৈশাখ কৃষ্ণা বরুথিনী
বৈশাখ শুক্লা মোহিনী
জ্যৈষ্ঠ কৃষ্ণা অপরা
জ্যৈষ্ঠ শুক্লা নির্জ্জলা
আষাঢ় কৃষ্ণা যোগিনী
আষাঢ় শুক্লা শয়নী
শ্রাবণ কৃষ্ণা কামিকা
শ্রাবণ শুক্লা পবিত্ররোপিণী
ভাদ্র কৃষ্ণা অন্নদা
ভাদ্র শুক্লা পাশ্বৈকাদশী
আশ্বিন কৃষ্ণা ইন্দ্রিরা
আশ্বিন শুক্লা পাশাঙ্কুশা
কার্ত্তিক কৃষ্ণা রমা
কার্ত্তিক শুক্লা উত্থান বা প্রবোধিনী
অগ্রহায়ণ কৃষ্ণা উৎপন্না (একাদশীর আবির্ভাব)
অগ্রহায়ণ শুক্লা মোক্ষদা
পৌষ কৃষ্ণা সফলা
পৌষ শুক্লা পুত্রদা
মাঘ কৃষ্ণা ষট্তিলা
মাঘ শুক্লা জয়া
ফাল্গুন কৃষ্ণা বিজয়া
ফাল্গুন শুক্লা আমলকী
চৈত্র কৃষ্ণা পাপমোচনী
চৈত্র শুক্লা কামদা
পুরুষোত্তম বা অধিকমাস কৃষ্ণা কমলা বা পরমা
পুরুষোত্তম বা অধিকমাস শুক্লা পদ্মিনী
কোন মন্তব্য নেই