বিবাহ যজ্ঞ

  


বৈদিক শাস্ত্র বিবাহকে যজ্ঞ  বলা হয়েছে। যয় মানেই বিষ্ণুকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে সম্পাদিত সেবা। সুতরাং যিনি বিবাহের মাধ্যমে গৃহস্থ  আশ্রমে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক কিংবা যিনি ইতিমধ্যেই গৃহস্থ আশ্রমে প্রবেশ করেছেন, তার জানা উচিত, গৃহস্থের কোন্ কোন্ আচরণে বিষ্ণু সন্তুষ্ট হন এবং কোন কোন আচরণে তিনি অসন্তুষ্ট হন। কেননা যখন তিনি অসন্তুষ্ট হন, তখন তা আর যজ্ঞ থাকে না, তা হয়ে ওঠে ইন্দ্রিয় তর্পণ।


শ্রীমদ্ভাগবতে (১১/৫/১১) বলা হয়েছে

লােকে ব্যবায়ামিষ-মদ্যসেবা

নিত্যাস্তু জন্তোর্নহি তত্র চোদনা

ব্যবস্থিতিস্তেষু বিবাহযজ্ঞ

সুরাগ্রহৈরাসু নিবৃত্তিরিষ্টা


অর্থাৎ এই জড় জগতে স্ত্রীসঙ্গ, আমিষ আহার ও নেশা করার। ব্যাপারে সকল প্রাণীরই স্বাভাবিক রুচি আছে। কিন্তু শাস্ত্রে যে বিবাহ ইত্যাদি যন্ত্রের ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে, তার উদ্দেশ্য এইসব স্বাভাবিক রুচিকে উৎসাহ দান করা নয়। বরং কোনাে ব্যক্তি যদি নৈষ্ঠিক ব্রহ্মচারী  কিংবা সন্ন্যাসী হয়ে থাকতে পারেন, তা হলে তা উত্তম। তা হলে শাস্ত্রে কেন বিবাহ, সূরাগ্রহ প্রভৃতি যজ্ঞের নির্দেশ দেওয়া হল? কারণ শাস্ত্রের উদ্দেশ্য হল বিবাহের মাধ্যমে স্ত্রীসঙ্গের প্রতি মানুষের স্বাভাবিক জড় রুচিকে নিয়ন্ত্রিত করা। তেমনি সুরাহ যজ্ঞের মাধ্যমে মদ্যপানকে।


নিয়ন্ত্রিত করা। অর্থাৎ মানুষ যেন অবাধ স্ত্রীসঙ্গ, অবাধ নেশা ইত্যাদিতে নিরুৎসাহিত হয়, সেজন্যই এই বিবাহ-বন্ধন, বিভিন্ন যজ্ঞের বন্ধন। আর যখনই কোন ব্যক্তি বিবাহ যঞ্জের মাধ্যমে অঙ্গীকারবদ্ধ হন, তখন শুধুমাত্র কৃষ্ণভক্ত সন্তান উৎপাদনের উদ্দেশ্য ছাড়া শুধুমাত্র ভােগের। জন্য এমনকি তার নিজের স্ত্রীর সঙ্গও করতে পারেন না, পরস্ত্রীর কোনাে প্রশ্নই ওঠে না। এইভাবে যখন কোনাে গৃহস্থ গৃহাশ্রমের অসংখ্য শাস্ত্রীয় বিধি মেনে চলেন, তখনই কেবল বিষ্ণু সস্তুষ্ট হন। আর তখনই তা যজ্ঞ।


কোন মন্তব্য নেই

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.